দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যু পরিস্থিতি বর্তমানে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে রয়েছে। ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারণে গত দেড় বছরের মধ্যে আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ডের এই সময়ে আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে কঠোর লকডাউনের (বিধি-নিষেধ) মেয়াদ। ঈদ-পরবর্তী ১৪ দিনের এই কঠোর লকডাউনের পর সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকে এখন সবার নজর। সবার একটাই প্রশ্ন, ৫ আগস্টের পর কি কঠোর লকডাউন থাকছে, নাকি শিথিল করা হচ্ছে? এ নিয়ে সরকারও চিন্তায় রয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ মঙ্গলবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠক শেষে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একেবারে লকডাউন তুলে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আবার বর্তমান পরিস্থিতিও বজায় রাখা কষ্টকর হবে। কারণ মানুষ অধৈর্য হয়ে পড়েছে। লকডাউন মানাতে মাঠে থাকা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা হাঁপিয়ে উঠছেন। সঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকার কথাও ভাবতে হচ্ছে সরকারকে। সব মিলিয়ে কিভাবে, কোন পর্যায়ের লকডাউন বা বিধি-নিষেধ থাকলে মন্দের ভালো পরিস্থিতি বজায় রাখা যায়, সেই চিন্তাই করছে সরকার। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও আজকের বৈঠকে পর্যালোচনা করে সরকারপ্রধানের সম্মতি নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আজ সকাল ১১টায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ১২ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, ১৬ জন সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, একাধিক সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আইইডিসিআর পরিচালকসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। বৈঠকটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভাকক্ষ থেকে পরিচালিত হবে। সেখানে কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিব সশরীরে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত ২৩ জুলাই থেকে টানা ১৪ দিনের কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে গত ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার। আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৫ আগস্টের পর আরো ১০ দিন বিধি-নিষেধ অব্যাহত রাখার সুপারিশ করেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে সরকার ঠিক কোন সিদ্ধান্ত নেবে তা আজকের বৈঠকের আগে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র।
মন্তব্য জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার জনগণের স্বার্থে সব সময় সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নিতে চায়। কড়া লকডাউন থাকলে সাধারণ মানুষের অনেক কষ্ট হয়। তাই সরকার কখনো লকডাউনের পক্ষে নয়। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে আমাদের এসব সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর কী হবে, তা আগামীকালের (আজ) বৈঠকের পর জানা যাবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।